জনতার সকাল ডেস্কঃ
পশু জবাই ও মাংসের মান নিয়ন্ত্রণ সংক্রান্ত আইন ও বিধিমালা অনুযায়ী, জবাইখানা বা মাংস বিক্রয় বা প্রক্রিয়াকরণ কারখানা স্থাপন ও পরিচালনার জন্য লাইসেন্সিং কর্তৃপক্ষ হিসেবে জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা পশুচিকিৎসক না হলে জেলা পশু চিকিৎসা কর্মকর্তা নিবন্ধনের ক্ষমতাপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন।
এখন থেকে মাংস বিক্রির জন্য লাইসেন্স নিতে হবে বিক্রেতাদের। গত বছরের ২৮ ডিসেম্বর এ সংক্রান্ত অনুমতিপত্র নিতে নির্দেশ জারি করে প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর। সম্প্রতি বিষয়টি সামনে এলে এ নিয়ে তীব্র অসন্তোষ জানিয়েছেন রাজধানীর পাইকারি ও খুচরা মাংস ব্যবসায়ীরা। তারা বলছেন, এতে করে মাংসের দামে নেতিবাচক প্রভাব পড়বে।
প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সদ্য বিদায়ী মহাপরিচালক মনজুর মোহাম্মদ শাহাজাদা এ সংক্রান্ত আদেশে স্বাক্ষর করেছিলেন। এর আওতায় এ, বি ও সি এই তিন ক্যাটাগরিতে বিক্রেতাদের নিবন্ধন দেওয়ার কথা বলা হয়েছে।
ওই আদেশে বলা হয়েছে, মাংস বা মাংসজাত পণ্য উৎপাদনের পরিমাণ প্রতি সপ্তাহে এক টনের নিচে হলে আবেদন ফি হবে এক হাজার। অনুমতিপত্রের ফি ১৫ হাজার এবং নবায়ন ফি হবে দেড় হাজার টাকা। এক টনের বেশি, কিন্তু আট টনের নিচে হলে আবেদন ফি হবে দুই হাজার। অনুমতিপত্রের ফি ২৫ হাজার ও নবায়ন ফি হবে সাড়ে সাত হাজার টাকা। আট টন বা তার বেশি হলে আবেদন ফি হবে তিন হাজার। অনুমতিপত্রের ফি ৭০ হাজার ও নবায়ন ফি হবে ১৫ হাজার।
আদেশে আরও বলা আছে, শুধু মাংস বিক্রি নয়, জবাইখানা ও মাংস প্রক্রিয়াকরণ কারখানা স্থাপন ও পরিচালনার জন্যও অধিদপ্তরের কাছ থেকে অনুমতিপত্র নিতে হবে। এতে খরচ হবে সর্বোচ্চ ৭০ হাজার টাকা।
পশু জবাই ও মাংসের মান নিয়ন্ত্রণ সংক্রান্ত আইন ও বিধিমালা অনুযায়ী, জবাইখানা বা মাংস বিক্রয় বা প্রক্রিয়াকরণ কারখানা স্থাপন ও পরিচালনার জন্য লাইসেন্সিং কর্তৃপক্ষ হিসেবে জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা পশুচিকিৎসক না হলে জেলা পশু চিকিৎসা কর্মকর্তা নিবন্ধনের ক্ষমতাপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন।
কাওরান বাজারের কালাম এন্টারপ্রাইজ নামের মাংসের দোকানি হাজী কামাল হাওলাদার বলেন, ‘মাংসের ব্যবসা নিয়ে এমনিতেই দৌড়ের ওপর আছি। আমি পাইকারি ও খুচরা মাংস বিক্রি করি। গত তিন দিন ধরে পাইকারিতে কেজিপ্রতি ১০ টাকা বেশি দামে মাংস কিনে বিক্রি করছি। আগে কিনতাম ৬২০ টাকা, এখন ৬৩০ টাকা কেজিতে কিনতে হয়। নিবন্ধন নেওয়ার পর দাম আরো বাড়াতে হবে। নাহলে টিকে থাকতে পারবো না। তখন মার্কেটের সবাই সিদ্ধান্ত নিয়ে দাম বাড়াবো।
গ্রামাঞ্চলের বাজারগুলোতে মাংস বিক্রেতারা সরকারের কোনো প্রতিষ্ঠান থেকে সাধারণত নিবন্ধন করেন না। তবে সিটি করপোরেশন এলাকার বিক্রেতাদের অধিদপ্তর থেকে অনুমতিপত্র নিলেও করপোরেশনের ট্রেড লাইসেন্সও নিতে হবে বলে জানিয়েছেন প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক জিনাত সুলতানা।
তিনি বলেন, ২০২১ সালের বিধিমালা বাস্তবায়নের আওতায় এই আদেশে জারি করা হয়েছে। লাইসেন্স ছাড়া কেউ মাংসের ব্যবসা করতে পারবেন না। তিনটি ক্যাটাগরিতে ফি নির্ধারণ করা হবে। এছাড়া কতটুকু মাংস উৎপাদন ও বিক্রি হচ্ছে এবং কত দামে বিক্রি হচ্ছে তাও তদারকি করা হবে।
নতুন নিয়মের কারণে বাজারে ক্রেতা পর্যায়ে মাংসের দাম কী বাড়বে? এমন প্রশ্নের জবাবে জিনাত সুলতানা বলেন, ব্যবসায়ীরা কেজিপ্রতি ৯০০-১০০০ টাকার নিচে এখন মাংস বিক্রি করেন না। এমনিতেই তারা বাড়তি লাভ করে থাকেন। ভোক্তা পর্যায়ে মাংসের মান নিশ্চিতে অধিদপ্তর কাজ করছে, তাই নিয়ম মেনেই ব্যবসা করতে হবে।
Leave a Reply